রসুনের আয়ুর্বেদিক উপকারিতা অনন্য। যদিও কম বেশী সবাই আমরা রান্নার মসলা হিসাবে রসুন ব্যবহার করে থাকি কিন্তু বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় রসুন বহুল ব্যবহৃত। কাচা রসুনের উপকারিতা এত বেশী যে সঠিক মাত্রায় নিয়মিত রসুন গ্রহনের মাধ্যমে বহু রোগ থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। যেমন ক্যান্সার, ঠান্ডা জনিত রোগ, হার্টের রোগ সহ যৌন দুরবলতা দূর করে। বিশেষ করে সেক্সে রসুনের উপকারিতা অকল্পনীয়। রসুনের স্বাস্থ্য উপকারিতা অসীম। তাই প্রতিদিন নারী পুরুষ সকলের কিছু রসুন গ্রহন করা উচিত। যেহেতু পুরুষের যৌন দুর্বলতা দুরীকরণে রসুনের বিশেষ কার্যকারীতা রয়েছে, তাই যারা যৌন দুর্বলতায় ভুগছেন বা যাদের দ্রুত বীর্যপাত ঘটে তারা নিয়মিত মাত্রায় রসুন গ্রহন করে যৌবণ ধরে রাখতে পারেন।
সাধারণ যৌন সমস্যাঃ
বয়স বৃদ্ধির কারণে প্রস্টেট গ্রন্থি নিঃসরিত টেস্টোস্টেরণ হরমণ হ্রাস পেয়ে থাকলে যৌন মিলনের ইচ্ছাও হ্রাস পায়। কিংবা একবার বীর্যপাত হওয়ার পর অনেক চেষ্টার পরও নতুন করে লিংগ উত্থান হতে চায় না। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয়বার লিংগ উত্থানে তিন থেকে চার ঘন্টা বা তারও বেশী সময় নেয়। যা একজন পুরুষের জন্য চরম অপমানজনক ও অসস্তিকর। আবার অতিরিক্ত হস্থমিথুন করার কারণেও স্নায়ু শৈথিল্যতা দেখা যায়। যার দরুন দ্রুত বীর্যপাত ঘটবে এটা অবধারিত। বীর্য তারল্যও দ্রুত বীর্যপাতের অন্যতম একটি কারণ। এরকম অবস্থা থেকে পরিত্রান পেতে রসুন অতুলণীয়। দ্রুত বীর্যপাত রোধ করতে ও যৌন মিলন দীর্ঘস্থায়ী করতে অনেকে বিদেশি সেক্সূয়াল মেডিসিনের প্রয়োগ শুরু করেন। এসব ঔষধের অনেক পার্শপ্রতিক্রিয়া আছে। শুধু তাই নয় আপনি চিরকালের জন্য এসব ঔষধের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন। এসব সমস্যা দূরীকরণে আয়ুর্বেদীয় উপাদানের ব্যবহার একটি দীর্ঘস্থায়ী সমাধান। মধু, কালিজিরা, পেঁয়াজ, রসুন, অর্শ্বগন্ধা, প্রভৃতি যুগ যুগ ধরে যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে বহুল ব্যবহৃত। কিন্তু এসব উপাদানের মধ্যে খাঁটি মধু বা অর্শ্বগন্ধা সহজলভ্য নাও হতে পারে এবং বেশ মূল্যবান উপাদান। সেই হিসাবে রসুন খুবই সহজলভ্য ও সব সময় ঘরেই থাকে। তাই নিয়মিত রসুনের ব্যবহার আপনার হারিয়ে যাওয়া যৌনশক্তিকে সহজেই ফিরিয়ে দিতে পারে। তাই বিদেশী সেক্সের ট্যাবলেট, ক্রিম বা জেল ব্যবহারের পূর্বে সেক্সে রসুনের উপকারিতা একবার যাচাই করে দেখুন।সেক্সে রসুনের উপকারিতা লাভের উপায়
সকালে খালি পেটে রসুন খেলে বেশ উপকার পাওয়া যেতে পারে।এ জন্য আপনি একটি বা দুইটি রসুনের কোয়া খেতে পারেন। গ্যাসট্রিক বা আলসার থাকলে সমস্যা হতে পারে। এজন্য বমি ভাব বা অসস্তি হতে পারে। সেক্ষেত্রে খাওয়ার পুর্বে ইসুবগুলের ভুষি খেয়ে নিতে পারেন। তাতেও ভাল উপকার পাবেন। রসুন বেশ ঝাঁঝাল ও প্রকট গন্ধ যুক্ত। সেক্ষেত্রে এক চামচ মধুর সাথে রসুন মিশিয়ে খেতে পারেন। মধুও যৌন শক্তি বর্ধক। এতে আরো বেশী উপকার অনুভব করবেন। এর সাথে হাফ চা চামচ কালিজিরাও গ্রহন করতে পারেন। তখন এটি একটি সেক্স পাওয়ার বুস্টার ফুড হিসাবে কাজ করবে। যদি আপনার হজমের সমস্যা বা অন্য কোন যৌন রোগ না থাকে তাহলে যৌণ দূর্বলতা দূরীকরণে আর কোন কিছু ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। এভাবে প্রতিদিন সকালে নিয়ম মেনে খেতে পারলে ভাল। তবে যদি তা সম্ভব নাও হয়, যৌন মিলনের তিন থেকে চার ঘন্টা পূর্বে রসুন, মধু আর কালিজিরা মিশিয়ে গ্রহন করুন। তাতেও সেক্সে রসুনের উপকারিতা বুঝতে পারবেন। তবে যদি শুধু রসুনই খান তাহলে খাওয়ার পর গরম পানি বা দুধ খেতে পারেন। রাতে এ নিয়মে প্রতিদিন ঘুমানোর আগে খেলেও ভাল ফল পাওয়া যায়।সেক্সে রসুনের কার্যকারীতা
স্নায়ুবিক দূর্বলতা দূর করে
রসুন ভিটামিন বি 6 সমৃদ্ধ একটি মসলা। এটি গ্রহন করার দরূন আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ও প্রাণ শক্তি অটুট থাকে। এর ফলে ক্লান্তি ও মানসিক চাপও দূর হয়। স্নায়ু সবল থাকে।বীর্য ঘন করে
রসুনের মধ্যে রয়েছে জিঙ্ক যা টেস্টোস্টেরন হরমন বৃদ্ধিতে সহায়ক। আর এই টেস্টোস্টেরন হরমনই আপনার যৌন শক্তির মূল উৎস। টেস্টোস্টেরন হরমন হ্রাস পেলে বীর্য কমে যায়। একারণে রসুন খেলে বির্য ঘন হয় ও যৌণ শক্তি বৃদ্ধি পায়।শুক্রাণু বৃদ্ধি করে
স্বাভাবিকভাবে প্রতি মিলিলিটার বীর্যে ১৫ মিলিয়ন থেকে ২০০ মিলিয়নেরও বেশি শুক্রাণু থাকে । প্রতি মিলিলিটারে শুক্রাণুর সংখ্যা যদি ১৫ মিলিয়ন শুক্রাণুর কম, বা প্রতি বীর্যপাতে ৩৯ মিলিয়ন শুক্রাণুর কম থাকে তখন একে নিম্ন মাত্রার শুক্রাণু বলে বিবেচিত করা হয়। রসুনে এমন কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা রক্ত ধমনীকে পরিস্কার রাখতে কাজ করে। এটি অপ্রয়োজনীয় পদার্থ অপসারণ করে ধমনীতে রক্ত পরবাহ বৃদ্ধি করে। যার ফলে অণ্ডকোষে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পায় এবং এর কার্যকারীতাও বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয় রসুনে প্রচুর পরিমানে জিঙ্কও রয়েছে। যা টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধি , শুক্রাণুর গতিশীলতা বৃদ্ধি এবং শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়াতে কার্যকরী। এভাবে রসুন শুক্রাণুর সংখ্যা বহুগুনে বৃদ্ধি করে। কখনো কখনো বীর্যতে পর্যাপ্ত পরিমানে সুস্থ শুক্রাণু না থাকায় অনেকে বাবা হতে পারেন না। এরকম ক্ষেত্রে রসুন একটি কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এরকম অবস্থায় নিয়মিত কাচাঁ রসুন সেবনে শুক্রাণু বৃদ্ধি পাবে।দ্রুত বীর্যপাত রোধ করে
দ্রুত বীর্যপাত ঘটার অন্যতম কারণ হলো বীর্য পাতলা হয়ে যাওয়া। এছাড়া স্নায়ুবিক দুর্বলতাও আরো বড় একটি কারণ। রসুন এই দুই সমস্যা দূরীকরণে খুব কার্যকরী ভূমিকা রাখে বিধায় নিয়মিত রসুন গ্রহন করায় দ্রুত বীর্যপাত রোধ হয়।সেক্সে রসুনের ব্যবহারে সতর্কতাঃ
- রসুন রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়াকে বাধা প্রদান করে রক্তকে পাতলা ও সচল করে। তাই বেশী রসুন খেলে সহজে রক্তপাত বন্ধ নাও হতে পারে। এ কারণে যাদের শরীরে কাটা ছেড়া হলে সহজে রক্তপাত বন্ধ হয় না, তারা রসুন গ্রহনের বিষয়ে সতর্ক থাকবেন।
- যদি পুর্ব নির্ধারিত কোন অপারেশন করার বিষয় থাকে। তখন রসুন গ্রহন করা থেকে বিরত থাকা ভাল। কারণ এতে রক্তপাত বন্ধ করা কঠিন হয়ে যাবে।
- রসুনে মুখে দুর্রগন্ধ হয়, তাই বেশী বেশী কাচাঁ রসুন গ্রহন না করাই ভাল।
- কাচাঁ রসুন খেলে পেটের ভিতর অসস্তি, অম্বল বা বমি বমি ভাব হতে পারে। সেক্ষেত্রে বেশী করে পানি খান, সাথে ইসুবগুলের ভুষিও খেয়ে দেখতে পারেন, বদহজম ভাব কমে আসবে।
- রসুন খেলে এলার্জি বেড়ে যেতে পারে। তাই যাদের রসুনে এলার্জি বাড়ে তারা রসুন খাওয়ার ব্যাপারে সাবধান থাকবেন।