জাল টাকা চেনার উপায় সহজ নয়। কারণ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে বর্তমানে জাল টাকা তৈরী করা হচ্ছে। যা সাধারণ মানুষের পক্ষে যাচাই করা খুব কঠিন। একারণে প্রতিদিন অনেক মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন। তাই নগদ টাকা লেনদেনের সময় সতর্ক থাকা খুব জরুরী। শুধু সতর্ক থাকলেই চলবেনা, আসল নোট চিনতে হবে। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত বিভিন তথ্য দিয়ে সহায়তা করে থাকে। তাদের প্রদত্ত এসকল বৈশিষ্ট্যগুলো আমরা এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। তাই আসল নোটের বৈশিষ্ট্য গুলো জেনে নিন। এ সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত একটি ভিডিও দেয়া আছে। সেই সাথে বিশেষ বৈশিষ্ট্য গুলো বিস্তারিত তুলে ধরা হল।
১০০০ টাকা - জাল টাকা চেনার উপায়ঃ
রং পরিবর্তনশীল হলোগ্রাফিক সু্তাঃ
নোটের বামপাশে ৫ মিলিমিটার চওড়া নিরাপত্তা সুতা রয়েছে, যা সোনালী হতে সবুজ রংয়ে পরিবর্তিত হয় এবং এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগো ও ‘১০০০ টাকা' লেখা রয়েছে। নোটটি আলোর বিপরীতে ধরলে তা দৃশ্যমান হবে। নোটটি নাড়াচাড়া করলে এতে হলোগ্রাফিক ইমেজ দেখা যাবে ।নোটের সামনের দিকে ইন্ট্যাগ্নিও কালির অসমতল ছাপাঃ
নোটের সামনের দিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ও বাংলাদেশ ব্যাংক লেখা এবং নোটের মূল্যমান ইন্ট্যাগ্লিও কালিতে মুদ্রিত আছে, যা হাতের স্পর্শে উঁচু-নীচু অনুভূত হবে।অতি ছোট আকারের লেখাঃ
অতি ক্ষুদ্র আকারের BANGLADESH BANK এবং 1000 TAKA পুন:পুন: এই লাইন দুইটিতে মুদ্রিত রয়েছে। লেখাগুলো অতি ক্ষুদ্র আকারের হওয়ায় আতশী কাঁচ ব্যতীত খালি চোখে এগুলো দেখা যাবে না ।লুকানো ছাপাঃ
নোটের নিচের বর্ডারে সুপ্ত বা লুকানো অবস্থায় ১০০০ মুদ্রিত আছে। নোটটি অনুভূমিকভাবে ধরলে লুকানো লেখাটি দেখা যাবে।ইরিডিসেন্ট স্ট্রাইপঃ
নোটের পিছনের দিকে BANGLADESH BANK লেখা ৮ মি.মি. চওড়া ইরিডিসেন্ট স্ট্রাইপ রয়েছে; নোটটি নাড়াচাড়া করলে স্ট্রাইপটি হলুদ থেকে নীল রংয়ে পরিবর্তন হবে।জাতীয় সংসদ ভবনের চিত্রঃ
নোটের পিছনের দিকে ইন্ট্যাগ্লিও কালিতে জাতীয় সংসদ ভবনের চিত্র মুদ্রিত আছে, যা হাতের স্পর্শে উঁচু-নীচু অনুভূত হবে।OVI
নোটের উপরের ডানকোণায় সোনালী থেকে সবুজ রংয়ের OVI (Optically Variable Ink) দ্বারা 1000 লেখা রয়েছে, নোটটি নাড়াচাড়া করলে যা সোনালী থেকে সবুজ রংয়ে পরিবর্তন হবে।অন্ধদের জন্য ইন্ট্যাগ্লিও কালির অসমতল ছাপাঃ
অন্ধদের জন্য নোটের ডানদিকে ৭টি সমান্তরাল লাইন ও এর নীচে ৫টি ছোট বৃত্ত ইন্ট্যাগ্লিও কালিতে মুদ্রিত আছে, যা হাতের স্পর্শে উঁচু-নীচু অনুভূত হবে ।জলছাপঃ
কাগজে জলছাপ হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি; প্রতিকৃতির নিচে 1000 লেখা এবং উপরে বামপাশে বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগোর উজ্জ্বলতর জলছাপ রয়েছে।কাগজঃ
নোটটি ১০০% কটন ফাইবার দ্বারা পরিবেশ বান্ধব উন্নত মানের কাগজে মুদ্রিত। এতে লাল, নীল ও হলুদ রংয়ের অদৃশ্য ফাইবার রয়েছে, যা UV (Ultra Voilet) লাইটে দৃশ্যমান হবে ।ভিডিওটি দেখুনঃ
ভিডিওটি দেখে ভাল লাগলে সাবস্ক্রাইব করে নিন।
অবশেষে বলা যায় ১০০০ টাকার নোটে এই সব বৈশিষ্ট্য যদি না দেখা যায়, তাহলে এটা নিশ্চিত যে, সেই নোটটি জাল। এরূপ ৫০০ টাকার জাল নোটও আপনি চিনতে পারবেন। এ বিষয়ে আরো ভাল করে জেনে নিতে পড়ুন ৫০০ টাকার নোট এর নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য - এই কলামটি। তাই নগদ টাকা লেনদেনের সময় জাল টাকা চেনার উপায় গুলো খেয়াল রাখুন, তাহলে আশা করা যায় এখন থেকে আপনিও জাল নোট তৈরীর প্রতারক চক্র থেকে নিজেকে সহজেই রক্ষা করতে পারবেন।